জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজী বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে কাজ করে আসছে। হাসপাতালের প্রথমদিকের বিভাগগুলোর একটি হিসেবে এর মূল লক্ষ্য হলো ক্যান্সার রোগীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা— সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিরোধ, ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের মাধ্যমে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভাগটি ক্যান্সার ও তার প্রতিরোধ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে র্যালি, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, সেমিনার এবং ইপিডেমিওলজী ও গবেষণা পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন। স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে বিভাগটি ক্যান্সার প্রতিরোধ ও প্রাথমিক শনাক্তকরণ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারে কাজ করছে।
২০০৫ সালে এই বিভাগ দেশের প্রথম হাসপাতালভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি চালু করে, যা ক্যান্সার আক্রান্তের হার ও প্রবণতা পর্যবেক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাত্তভাণ্ডার হিসেবে কাজ করছে। এ তথ্য স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া বিভাগটি হাসপাতালের প্রথম ওয়েবসাইট চালু করার উদ্যোগ নেয়, যা ক্যান্সারসংশ্লিষ্ট তথ্য ও গবেষণা প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
বিভাগটি নিয়মিতভাবে জেলার স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা (DHIS2)-তে তথ্য সংগ্রহ ও আপলোড করে, যাতে সঠিক ও হালনাগাদ তথ্য স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হয়। পাশাপাশি, মৃত্যুর মূল কারণ (MCCOD) বিষয়ক তথ্য ব্যবস্থাপনাও বিভাগটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, যা ক্যান্সার ইপিডেমিওলজী ও জনস্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব বুঝতে সহায়তা করে।
২০১৪ সালে বিভাগটি “ক্যান্সার জিজ্ঞাসা” নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি চালু করে, যার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মধ্যে ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, বিশেষত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দেওয়া। এই কর্মসূচি একটি আন্তঃক্রিয়াশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে কমিউনিটির মানুষ ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারে ও বিভ্রান্তি দূর করতে পারে।
বিভাগটির আরেকটি বড় অর্জন হলো আধুনিক রেকর্ড রুম স্থাপন, যেখানে ক্যান্সার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য সহজলভ্য রাখা হয়। এছাড়া, বিভাগটি এমডি, এমএস, এফসিপিএস কোর্সের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের গবেষণামূলক প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিয়ে থাকে।
যদিও জনবল স্বল্পতার মতো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, তবুও ক্যান্সার ইপিডেমিওলজী বিভাগ দৃঢ় প্রত্যয়ে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নিবেদিত প্রচেষ্টা ও নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে এই বিভাগ বাংলাদেশে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।
১. ক্যান্সার রোগীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ
২. তথ্য ব্যবস্থাপনা ও বিশ্লেষণ
৩. হাসপাতালভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন (HBCR) প্রস্তুতকরণ এবং দেশের সব পুরোনো সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত ক্যান্সার কেন্দ্রে হাসপাতাল ক্যান্সার নিবন্ধন সম্প্রসারণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন
৪. ফান্ডেড রিসার্চ (২০২৪–২৫): Determinants of Treatment Delays in Breast Cancer Patients: Identifying Solutions for Improved Care
৫. শিক্ষা/প্রশিক্ষণ
৬. সিএমই
৭. ক্যান্সার প্রতিরোধ ও সচেতনতা প্রচারণা
৮. বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ
৯. প্রশাসনিক কার্যক্রম